অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফ্রান্সের তুলুয বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপককে তার ইহুদিবাদ বিরোধী বক্তব্যের কারণে বরখাস্ত করা হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের সমালোচনা করার কারণে ফ্রান্সের তুলুয বিশ্ববিদ্যালয়ের (টিএসই) গণিতের অধ্যাপক “বেনভা হোভ”কে বরখাস্ত করা হয়। পার্সটুডে জানিয়েছে, একজন ছাত্র এই অধ্যাপকের রেকর্ড করা ভয়েস প্রকাশ করার পর তুলুয বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই অডিও ফাইলে, অধ্যাপক “বেনভা হোভ” গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে পশ্চিমা সমাজের নীরবতার সমালোচনা করে বলেছেন: “আমি আমার জীবদ্দশায় এমন নৃশংস গণহত্যা স্বচক্ষে কখনো দেখিনি।”
পশ্চিমা দেশগুলো সবসময় নিজেদেরকে গণতন্ত্র এবং বাকস্বাধীনতার ধ্বজাধারী বলে মনে করে এবং এরমধ্যে ফ্রান্স এই দাবির অগ্রভাগে রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলী বিশেষ করে টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরভকে গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে ফিলিস্তিনিপন্থী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘটনা ফ্রান্সের গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা রক্ষার দাবিকে সম্পূর্ণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এই অডিও ফাইলে অধ্যাপক বেনভা হোভ বলেছেন, “আমি আমার ৩৫ বছরের জীবনে কখনও এমন গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান প্রত্যক্ষ করিনি।”
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে অধিকৃত ফিলিস্তিনে যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হয়নি উল্লেখ করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বলেছেন, সংকট আরো বহু আগে থেকে সৃষ্টি হয়েছে এবং গাজায় এখন যে গণহত্যা চলছে তার কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা থাকতে পারে না।
এবার ফ্রান্সের অপরাধ বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে নেমেছে।
কয়েক মাস আগে, নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপককে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অথচ তিনি সেখানে ২০ বছর ধরে অধ্যাপনা করছেন।
গত ৭ অক্টোবর থেকে, পশ্চিমা দেশগুলোর পূর্ণ সমর্থন নিয়ে ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠী ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র ও নির্যাতিত জনগণের বিরুদ্ধে বিশেষ করে গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালিয়ে আসছে। বর্তমানে ইসরাইল নতুন করে জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরেও গণহত্যা শুরু করেছে।
সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় ইহুদিবাদী শাসকদের হামলায় ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ এবং ৯৪ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে।
ব্রিটিশদের পরিকল্পনা অনুসারে ১৯১৭ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি পেশ করা হয় এবং এ লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদেরকে এনে ফিলিস্তিনি ভূমিতে জড়ো করা হয়। এরপর ১৯৪৮ সালে ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপর থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর হত্যা এবং তাদের ভূমি দখল অব্যাহত রয়েছে।
ইরানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি দেশ ইসরাইলের ঔপনিবেশিক শাসনের বিলুপ্তি এবং ইহুদিদের তাদের যে যার দেশে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
Leave a Reply